
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আজাদ হোসেন আজাদকে হাতুড়িপেটার ঘটনা অরাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত বলে দাবি করেছে জামায়াতে ইসলামী।
রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে সিরাজগঞ্জ শহরের দরগা রোডস্থ জেলা জামায়াত কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা শাহিনুর আলম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় উল্লাপাড়া পৌর বাস টার্মিনালের ইজারাগ্রহীতা এবং বিএনপির নেতা আজাদ হোসেনের মধ্যে চাঁদা উত্তোলন সংক্রান্ত ঘটনায় কথাকাটাকাটি হয়। ওই সময় ইজারাগ্রহীতা পক্ষের প্রতিনিধি হাফিজুল ও তার সঙ্গে থাকা ৫-৬ জনকে আজাদ হোসেনের সঙ্গে থাকা ১৫০-২০০ জন মারধর করে। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
তিনি বলেন, এ ঘটনার পরদিন জুমার নামাজ শেষে রামকান্তপুর গ্রামের বিভিন্ন মতের মানুষ একত্রিত হয়ে আজাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা এই হামলার নিন্দা জানাই এবং তার আশু সুস্থতা কামনা করি।
তিনি আরও জানান, জামায়াতকর্মী হাফিজুল এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় আমি নিজে তাকে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে সোপর্দ করেছি, যা দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল। ঘটনাটি ব্যক্তিগত ব্যবসা ও চাঁদাবাজি সংশ্লিষ্ট, রাজনৈতিক নয়।
তিনি অভিযোগ করেন, জেলা বিএনপি এই ঘটনাকে রাজনৈতিক রূপ দিয়ে জামায়াতের ওপর দায় চাপিয়েছে। এরপর বিএনপি নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয় এবং জামায়াতের নেতাকর্মীদের মারধর ও দলীয় অফিসে ভাঙচুর করে। ছাত্রদলের একটি মিছিল থেকে "ধর ধর শিবির ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর" স্লোগানও দেওয়া হয়, যা ফৌজদারি অপরাধের শামিল।
তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভিযুক্ত হাফিজুলকে বহিষ্কারের জন্য দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সুপারিশ করা হয়েছে এবং তা দ্রুত কার্যকর হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুস সালাম, সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম এবং শহর জামায়াতের আমীর অধ্যাপক আব্দুল লতিফসহ অন্যান্য নেতারা।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে উল্লাপাড়া থানার সামনে বিএনপি নেতা আজাদকে হাতুড়িপেটা করা হয়। বর্তমানে তিনি ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মাথার দুটি স্থানে হাড় ভেঙে যাওয়ায় তাকে অপারেশন করাতে হয়েছে।
এ ঘটনায় তার ভাই ও উল্লাপাড়া পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের ১৫ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলার প্রধান আসামি পৌর জামায়াতের প্রচার সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর