
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাস (জুলাই-মার্চ) শেষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা। এনবিআরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, এ সময়ে তিন লাখ ২২ হাজার ১৫২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্য নির্ধারিত থাকলেও আদায় হয়েছে মাত্র দুই লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
ফলে মার্চ পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের হার দাঁড়িয়েছে ৭৯.৬২ শতাংশ, অর্থাৎ ঘাটতির হার ২০.৩৮ শতাংশ। যদিও রাজস্ব আহরণে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি, তবে আগের বছরের তুলনায় সামগ্রিকভাবে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২.৭৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে আদায় হয়েছিল দুই লাখ ৪৯ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা।
আয়কর, শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট)—তিন খাতেই প্রবৃদ্ধি হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম আদায় হয়েছে।
ভ্যাট খাতে ৯ মাসে আদায় হয়েছে ৯৫ হাজার ৩১১ কোটি টাকা, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা থেকে ঘাটতি রয়েছে ১৯ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা। এই খাতে প্রবৃদ্ধির হার ২.০৯ শতাংশ।
শুল্ক খাতে আদায় হয়েছে ৭৪ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম ১৬ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি মাত্র ০.৩৮ শতাংশ।
আয়কর খাতে আদায় হয়েছে ৮৬ হাজার ৯২০ কোটি টাকা, যেখানে ঘাটতির পরিমাণ ২৯ হাজার ৭৫৫ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.৬৭ শতাংশ।
একক মাস হিসেবে শুধু মার্চেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ হাজার ৯৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। তবে আদায় হয়েছে ৩৪ হাজার ৬৬৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, অর্থাৎ ঘাটতি সাত হাজার ৪২৩ কোটি টাকা। যদিও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি, তবে আগের অর্থবছরের মার্চের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯.৬৪ শতাংশ।
মার্চে খাতভিত্তিক আদায়ের চিত্র:
শুল্ক: ৯ হাজার ৮১৫ কোটি টাকা (প্রবৃদ্ধি ১২.৯৭%)
ভ্যাট: ১১ হাজার ৮৮ কোটি টাকা (প্রবৃদ্ধি ১.১৮%)
আয়কর: ১৩ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা (প্রবৃদ্ধি ১৪.৯৭%)
এনবিআর সদস্য (ভ্যাট বাস্তবায়ন ও আইটি) মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘রোজার ঈদের ছুটি থাকায় রাজস্ব আদায়ে একটি বড় সময় নষ্ট হয়েছে। তাছাড়া, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) প্রদত্ত প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার একটি অংশ মার্চের হিসাবে আসেনি। এছাড়াও, ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকোর কারখানা স্থানান্তরের কারণে তাদের কাছ থেকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে।’
চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে চার লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অর্থবছরের বাকি সময়গুলোতে রাজস্ব আদায় বাড়িয়ে এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এনবিআর আরও কার্যকর উদ্যোগ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সর্বশেষ খবর