
বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার হওয়া সমাজকর্মী মেঘনা আলমের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছেন দেশের ২৭ জন বিশিষ্ট নারী অধিকারকর্মী। রোববার (১৩ এপ্রিল) তাঁরা ইমেইলের মাধ্যমে এই চিঠি পাঠান।
চিঠিতে বলা হয়, ৯ এপ্রিল পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ও ভাটারা থানা যৌথভাবে আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে মেঘনা আলমকে আটক করে। ফেসবুক লাইভে সরাসরি সম্প্রচার হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, অস্ত্রধারী কয়েকজন পুরুষ কর্মকর্তা "জন্ম নিবন্ধন যাচাইয়ের" কথা বলে জোরপূর্বক তার বাসায় ঢোকার চেষ্টা করেন। মেঘনা দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানালে তাঁরা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং কোনো পরোয়ানা ছাড়াই তাঁর মোবাইলসহ অন্যান্য ডিভাইস জব্দ করে নিয়ে যান।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সেদিন রাতেই পুলিশ ভবনের সিসিটিভি হার্ডড্রাইভও নিয়ে যায়। প্রায় ২৪ ঘণ্টা অজানা অবস্থানে রাখার পর জানা যায়, ১০ এপ্রিল রাতে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয় এবং "জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি", "কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করা" ও "অর্থনৈতিক ক্ষতির ষড়যন্ত্র" করার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪-এর আওতায় ৩০ দিনের রিমান্ডে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।
১৩ এপ্রিল হাইকোর্ট সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে রুল জারি করে জানতে চায়, কেন এই গ্রেপ্তার অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং কেন তাঁকে মুক্তি দেওয়া হবে না। তবে ১৭ এপ্রিল গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা নতুন একটি মামলায় তাঁকে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার অভিযোগে পুনরায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এই সময় তাঁর পরিবার বা আইনজীবীদের উপস্থিত থাকার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
চিঠিতে বলা হয়, পরিবারের সদস্যরা সাত দিন পর মেঘনার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান, কারণ এই আইনের অধীনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয় না।
চিঠিতে নারী অধিকারকর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “মেঘনাকে বিনা কারণে আটক রেখে রাষ্ট্র যে বেপরোয়া ক্ষমতা প্রয়োগ করছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।” তাঁরা আরও বলেন, “এই ঘটনাগুলো বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭, ৩১, ৩২ ও ৩৩ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, আইনগত সুরক্ষা ও যথাযথ প্রক্রিয়ার নিশ্চয়তা দেয়।”
তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই আটকের বৈধতা ও প্রক্রিয়া নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানান। চিঠিতে প্রশ্ন রাখা হয়— কে এই আটক ও গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন, কী তদন্তের ভিত্তিতে তাঁকে "জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি" হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে, এবং এই প্রক্রিয়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি না।
চিঠিতে সই করেছেন দেশের খ্যাতনামা ২৭ জন নারী অধিকারকর্মী, গবেষক, শিক্ষক, আইনজীবী, শিল্পী ও সংগঠক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন:
সর্বশেষ খবর