
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা কৃষিবিদদের প্রতি চলমান বৈষম্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন এবং ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন চত্বরে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিগুলো উপস্থাপন করেন।
শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবিসমূহ হলো:
১. ১০ম গ্রেডের (উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা/সমমান) চাকরিতে বিএসসি ও ডিপ্লোমা সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।
২. বিসিএস পরীক্ষা ছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা পদে যোগদান করা যাবে না; ১০ম গ্রেড থেকে ৯ম গ্রেডে পদোন্নতি বন্ধ করতে হবে।
৩. বিএডিসিসহ অন্যান্য স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমাধারীদের ৯ম গ্রেডে পদোন্নতি বন্ধ করতে হবে।
৪. প্রচলিত ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম ছাড়া পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ রাখা যাবে না।
৫. কৃষি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতক ব্যতীত নামের পর্বে "কৃষিবিদ" পদবী ব্যবহার করা যাবে না; এ বিষয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
৬. কৃষি বিষয়ক ডিপ্লোমা বা কারিগরি শিক্ষাকে কৃষি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান (কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর) এর অধীনেই রাখতে হবে।
এর আগে গতকাল রবিবার উচ্চশিক্ষার সুযোগসহ ৮ দফা দাবিতে সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কৃষি ডিপ্লোমার শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনে ‘কৃষি ডিপ্লোমা ছাত্র অধিকার আন্দোলন’-এর ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে সারা দেশে থেকে আগত কয়েকশ’ ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন ডিপ্লোমাধারী কৃষিবিদদের ৮ দফা দাবি অযৌক্তিক।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী বাকৃবির শিক্ষার্থী আবু বক্কর সিদ্দিক মাসুম জানান, ডিপ্লোমাধারী কৃষিবিদদের উত্থাপিত ৮ দফা দাবি বাস্তবতা ও ন্যায়ের নিরিখে অযৌক্তিক। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এসব দাবি গ্রহণ না করার আহ্বান জানাই। আমার মতে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত দেশের সকল ধরনের বৈষম্য দূর করা এবং একটি সমতাভিত্তিক সমাজ গঠন। এছাড়াও স্নাতক কৃষিবিদরা প্রয়োজনীয় সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এখনও ১০ম গ্রেডে চাকরির ন্যায্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এসময় বাকৃবির তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বিন ইয়ামিন ইমন বলেন, দেশের কৃষি উন্নয়নে বিএসসি কৃষিবিদরা নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও উচ্চফলনশীল জাত উন্নয়নে বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। এই প্রেক্ষাপটে, যদি ডিপ্লোমাধারীদেরকে এসব দায়িত্বে নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে দেশের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের অগ্রগতি ব্যাহত হতে পারে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
কৃষি রসায়ন বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী রেজভী আহমেদ জনি বলেন, ডিপ্লোমাধারীদের আট দফার পরী প্রেক্ষিতে আমরা আজকে ছয় দফা উত্থাপন করেছি। তারা আট দফার মাধ্যমে এক প্রকার আমাদের অস্তিত্বে আঘাত করেছে। আমাদের দাবি না মানলে এই আন্দোলন সামনের দিনেও চলবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর