
নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার গোমনাতী ইউনিয়নে গোমনাতী মডেল একাডেমি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিজান আহম্মেদ বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ এনে ধর্ষক বলে গুজব ছড়িয়ে মব জাস্টিস সৃষ্টি করে হেনস্তা করার ঘটনায় ৮ জন নামীয় এবং আড়াই শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিনি। এই ঘটনায় গোমনাতী বাজার এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, গোমনাতী মডেল একাডেমির একটি শিক্ষার্থীর ওপর নির্যাতনের অভিযোগ এনে রোববার কিছু যুবক প্রধান শিক্ষক মিজান আহম্মেদকে টেনে হিচড়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে মারধর শুরু করে। এ সময় শত শত এলাকাবাসী সেখানে উপস্থিত হলে প্রধান শিক্ষককে শিক্ষার্থী ধর্ষক হিসেবে গুজব ছড়িয়ে মব জাস্টিস তৈরি করা হয়। তাকে কিল-ঘুষি মারার পর এক পর্যায়ে তার মাথা ন্যাড়া করা হয়, গলায় সেন্ডেল দিয়ে মালা পরিয়ে এবং লাল-নীল রং মেখে গোমনাতী বাজারে ঘুরানো হয়। প্রায় দু'ঘণ্টা পর পুলিশ তাকে জনতার কবল থেকে উদ্ধার করে ডোমার থানায় নিয়ে যায়।
পরে ভিকটিম শিক্ষার্থী ও তার মা থানায় গিয়ে ঘটনার মিথ্যা এবং সাজানো বলায় পুলিশ প্রধান শিক্ষককে ছেড়ে দেয়। এর পর, প্রধান শিক্ষক মিজান আহম্মেদ অপর এক কিন্ডারগার্টেন স্কুল (গ্রীন স্টার একাডেমি)-এর প্রধান শিক্ষক আরিফ হোসেন মোস্তাজিরকে ১নং আসামি ও হুকুমদাতা হিসেবে উল্লেখ করে আক্কাস আলী, লিটন, মিজান, দালাল ফারুক, মমিনুল, নুর আলম, হৃদয়সহ অজ্ঞাত ২৫০ জনকে আসামি করে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মব জাস্টিস সৃষ্টি করার অভিযোগে ডোমার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার নম্বর ১৭, তারিখ ২০/০৪/২০২৫।
এ বিষয়ে গোমনাতী ইউপি চেয়ারম্যান ফয়সাল আহমেদ শুভ বলেন, "এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমি জীবনে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। হ্যান্ড মাইক দিয়ে ঘোষণা দিলেও মানুষজন শান্ত হয়নি এবং আমার বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছে। অনেক কষ্টে পুলিশকে সহযোগিতা করে তাকে উদ্ধার করে থানায় পাঠানো হয়। আমি মনে করি, কিছু মানুষের উস্কানিতে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হয়েছে।"
এ ঘটনায় এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা থাকলেও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সর্বশেষ খবর