
রাজবাড়ীর পাংশায় এক নারীর এক বছর আগে মারা যান স্বামী। তিন কন্যা সন্তান নিয়ে পড়েন বিপাকে। অভাবে এক পর্যায়ে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিয়ের আশ্বাসে একাধিকবার অবৈধ শারীরিক সম্পর্কে জড়ান এক চা দোকানীর সাথে। সম্পর্কের জেরে গর্ভবতী হয়ে পড়েন ওই বিধবা নারী। গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা করে ব্যর্থ হন ওই চা দোকানী।
ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায়। অভিযুক্ত ওই চা দোকানী হলেন, উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের বিল গজারিয়া গ্রামের শাহেদ শেখের ছেলে মো: খায়রুল ইসলাম। বাহাদুরপুর ইউনিয়নের সেনগ্রাম বাজারে তার একটি চায়ের দোকান রয়েছে।
জানা যায়, ১৩ এপ্রিল (রবিবার) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে পাংশার এন,আর ক্লিনিকে আসেন ওই নারী। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায় গর্ভে ৬ মাসের মৃত সন্তান রয়েছে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বর্তমানে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ওই নারী ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চিকিৎসাধীন নারী জানান, গত এক বছর আগে আমার স্বামী মারা গেছে। তিন কন্যা সন্তান নিয়ে কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে চলছিলাম। খায়রুল শেখ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সাথে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে আমি গর্ভবতী হই। সে আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে বলে। আমি গর্ভবতী হওয়ার ছয় মাস পূর্ণ হলে বাচ্চাটি পেটের মধ্যেই মারা যায়। বিয়ে করার কথা বলে খায়রুল আমার সাথে যে অন্যায় করেছে, আমি তার বিচার চাই।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত খায়রুল শেখের চায়ের দোকানে গেলে দোকান বন্ধ পাওয়া যায়। এসময় প্রতিবেশী ব্যবসায়ীরা জানান, এ ঘটনার পর থেকেই খায়রুলের দোকানটি বন্ধ রয়েছে। তিনি বাজারে আসেন না।
ঘটনার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত খায়রুল শেখের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।
এন,আর ক্লিনিকের সেবিকা সাদিয়া রহমান জানান, ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পেটে ব্যথা নিয়ে ক্লিনিকে আসেন। আমাদের স্যার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার গর্ভে থাকা ছয় মাস বয়সী বাচ্চাটিকে মৃত দেখতে পান। পরবর্তীতে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে মৃত বাচ্চা বের করা হয়। রোগীর অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক ছিল। ৭ ব্যাগ রক্ত দেয়ার পর বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত।
পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি ওই দিন রাতেই জানতে পেরেছি। ওই নারী শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ ছিলো। তাকে চিকিৎসা নিতে বলেছি। চিকিৎসা শেষে অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর