
কক্সবাজারে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে এসে নিখোঁজ হওয়া সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার ছয় শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে টেকনাফের রাজারছড়া পাহাড় থেকে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ছয় শ্রমিককে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।
এর আগে দুপুরে নিখোঁজদের একজন রশিদ আহমদ পরিবারের এক সদস্যকে ফোন করে জানায়, তাদের ‘ট্রলারে করে ইন্দোনেশিয়ায় নেওয়া হয়েছে’। এই ফোনকল আরও আতঙ্ক বাড়িয়ে দেয় পরিবারের মধ্যে।
নিখোঁজ এমাদ উদ্দিনের ভাই বাহার উদ্দিন জানান, “রশিদ দুপুরে আমাকে ফোন করে বলে, তারা ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছেছে। এরপর আর কিছু জানায়নি। ফোন নম্বরটিও বন্ধ হয়ে যায়।”
ঘটনার পর সন্ধ্যায় বাহার উদ্দিন ও নিখোঁজদের আরও চারজন স্বজন টেকনাফ থানায় গিয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
টেকনাফ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হাসান বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ অভিযান শুরু করে এবং রাজারছড়া পাহাড় থেকে তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়।”
উদ্ধার হওয়া ছয়জন হলেন: রশিদ আহমদ (২০), মারুফ আহমদ (১৮), শাহিন আহমদ (২১), এমাদ উদ্দিন (২২), খালেদ হাসান (১৯), আব্দুল জলিল (৫৫)।
তারা সবাই সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার ঈদগাঁও বাজার সংলগ্ন পশ্চিম লোহারমহল গ্রামের বাসিন্দা।
গত ১৫ এপ্রিল বিকেলে তারা রাজমিস্ত্রির কাজের উদ্দেশ্যে কক্সবাজার রওনা দেন। ১৬ এপ্রিল পরিবারের সঙ্গে সর্বশেষ যোগাযোগের পর থেকেই তারা ‘নিরুদ্দেশ’ ছিলেন।
ঘটনার বিষয়ে কক্সবাজার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মুখপাত্র) জসিম উদ্দিন বলেন, “নিখোঁজ ৬ জনকে উদ্ধার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ ঘটনার সঙ্গে কোনো পাচার বা অপহরণ চক্র জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এ ঘটনার মাধ্যমে আবারও আলোচনায় এসেছে টেকনাফ-উখিয়া অঞ্চলে মানবপাচার ও শ্রমজীবী মানুষদের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার রহস্যঘেরা চিত্র। স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, ‘ভুয়া কাজের’ প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষজনকে নানা চক্র জিম্মি বা পাচার করে থাকে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর