
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় ধানকোড়া এলাকায় জোরপূর্বক বন্ধ থাকা রাস্তাটি দখলমুক্ত করতে এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ করে আসছে।
প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আজ বুধবার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয় অবস্থান মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী গ্ৰামবাসী। জেলা প্রশাসক ভুক্তভোগী গ্রামবাসীর সাথে কথা না বলে দাপ্তরিক কাজে অফিস ত্যাগ করলে মানববন্ধনকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয় অবরুদ্ধ করার চেষ্টা করে।
এক ঘণ্টা চেষ্টার পর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল দশটায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধনে অংশ নেয় সাটুরিয়া উপজেলার গোলড়া এলাকার ৩ শতাধিক নারী-পুরুষ।
দেড় দশক ভাগে গ্রামবাসীর যাতায়াতের রাস্তা দখল করে দুটি কোম্পানি। এরপর থেকে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা ঘুরে যাতায়াত শুরু করে। এতে করে কৃষি প্রধান এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের পণ্য পরিবহন ও স্বাভাবিক যাতায়া ব্যয় বেড়েছে অনেকাংশে।
জানা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া এলাকায় তারাসিমা অ্যাপারেলস ও পেয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামক দুটি শিল্পজাত কোম্পানি শত বছরের পুরোনো গ্রামীণ সড়ক আটকে দেয়াল নির্মাণ করেছে। এতে করে আশপাশের এলাকার মানুষজনের চলাচলে বহু দূরত্বের বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে হচ্ছে।
এ বিষয় নিয়ে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী দীর্ঘদিন যাবত দখলকারী প্রতিষ্ঠান এবং প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। এতেও কোন সফল আসেনি। কোন উপায় না পেয়ে চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি ৩ ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক আটকে রেখে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে আগত ভুক্তভোগীরা জানান, 'আশপাশের পাঁচটি এলাকার যাতায়াতের প্রধান সড়ক ছিল এটি যা দুটি বৃহৎ কোম্পানি জোরপূর্বক বন্ধ করে রেখেছে। আমরা ইতঃপূর্বে বহুবার প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছি তারা শুধু আমাদের আশ্বস্তই করেছে কিন্তু কোন প্রতিকার করতে পারিনি। আজকে সকাল থেকে আমরা জেলা প্রশাসক কার্যালয় অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধনের ডাক দেই গ্রামবাসী স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিত হয়।
এটা তো আমাদের কোন অযৌক্তিক আবদার না জেলা প্রশাসক আমাদের কথা না শুনে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে অফিস থেকে চলে গেলেন। এতেই প্রমাণিত হয় আমাদের এই কাজে তার সদিচ্ছা নেই।
বেআইনিভাবে দখল করে রাখা রাস্তাটি তিনি উদ্ধার করতে পারছেন না। আমরা এর নিন্দা জানাই। আমরা এই স্বেচ্ছাচারী জেলা প্রশাসককে চাই না, যে কিনা জনগণের পক্ষে কাজে না করে প্রতিষ্ঠানের হয়ে দালালি করছেন।'
এরপর দুপুর আড়াইটায় জেলা প্রশাসক ড. মনোয়ার হোসেন মোল্লা উপস্থিত হয়ে মানববন্ধনকারীদের সাথে তাদের দাবি-দাবা নিয়ে কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আতিকুল মামুন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আলী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হাসান খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম আমান উল্লাহ, মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস, সদস্য সচিব শাহানুর ইসলাম প্রমুখ।
এ সময় জেলা প্রশাসক মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, 'আমরা জায়গাটা সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করব। দেখে এসে থিউরিটিকালি আমরা আপনাদের এবং মালিক পক্ষের সাথে সরাসরি বসব। আমরা সে মিটিংয়ে একটা লিখিত সিদ্ধান্তে আসব।
আমার লিমিটেশনগুলো আইন দ্বারা সীমাবদ্ধ আমি বেআইনি কিছু করতে পারবো না। আমি চাই এ বিষয়টা যেন আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয় আইন পর্যন্ত যেন যাওয়া না লাগে। কারণ আইনি প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল।
আমাদের আন্তরিকতা আছে আপনারা কেউই আইন-শৃঙ্খলার অবনতি করবেন না। দেশটা আমাদের আমরা জেনেশুনে যেন কেউ দেশের ক্ষতি না করি।'
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর