
দীর্ঘদিনের দাবি ও ভোগান্তির অবসান ঘটিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) থেকে কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে নিয়মিত সি-ট্রাক চলাচল শুরু হয়েছে। কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর ৬ নম্বর জেটিঘাটে সকাল সাড়ে ১০টায় এই নৌসেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন তিনটি ট্রিপে ২৫০ জন যাত্রী বহনে সক্ষম সি-ট্রাক চলবে কক্সবাজার ও মহেশখালীর মধ্যে। বাঁকখালী নদীর ৬ নম্বর ঘাট থেকে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা এবং নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে মহেশখালী যেতে লাগবে ৪০ টাকা।
সি-ট্রাক সেবা চালুর খবরে দ্বীপবাসীর মধ্যে স্বস্তি ও আনন্দের জোয়ার বইছে। স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমে উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়ে কাঠের নৌকা, লোহার গামবোট ও স্পিডবোটে করে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা করতে হতো। এই যানবাহনগুলো নিয়ন্ত্রণ করত একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট, যারা যাত্রীদের নানাভাবে জিম্মি করে রাখত। নতুন এই সি-ট্রাক চালু হওয়ায় সেই সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তারা।
বিআইডব্লিউটিএ’র কক্সবাজার নদীবন্দর (কস্তুরাঘাট) শাখার সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান জানান, আপাতত প্রতিদিন তিনবার করে সি-ট্রাক চলাচল করবে। যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ভবিষ্যতে ট্রিপ সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ভাড়া কমানোর দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সি-ট্রাক চলাচলের সময়সূচি:
কক্সবাজার থেকে মহেশখালী: সকাল ৮:৩০, দুপুর ১২:০০, সন্ধ্যা ৬:০০
মহেশখালী থেকে কক্সবাজার: সকাল ৭:৩০, বেলা ১১:০০, বিকেল ৫:০০
মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হেদায়েত উল্যাহ বলেন, “দ্বীপবাসী সি-ট্রাক চলাচলে অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মহেশখালী জেটিঘাটে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, প্রায় ৩৮৮ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়ন রয়েছে। ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী এখানকার জনসংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৮৫ হাজার। আদিনাথ মন্দিরসহ একাধিক পর্যটন কেন্দ্র থাকায় মহেশখালী সারা বছর পর্যটকে ভরপুর থাকে।
স্থানীয়দের প্রত্যাশা, সি-ট্রাক সেবা নিয়মিত থাকলে যাত্রা হবে নিরাপদ, ভ্রমণ হবে সাশ্রয়ী এবং মহেশখালীর পর্যটনশিল্প পাবে নতুন গতি।
সর্বশেষ খবর