
বগুড়ার শেরপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হলেও সরকার ঘোষিত ‘জুলাই যোদ্ধা’ তালিকায় জায়গা পাননি ১১ তরুণ। আন্দোলনে জীবন বাজি রেখে অংশ নেওয়া এই তরুণদের নাম নেই সম্প্রতি প্রকাশিত সরকারী গেজেটে। এতে স্থানীয়ভাবে ক্ষোভ ও হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে।
২০২৪ সালের ১৭ ও ২০ জুলাই এবং ৪ আগস্ট শেরপুর উপজেলার ধুনট মোড় এলাকায় শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত ১১ জন তরুণ গুলিবিদ্ধ হন। কোটা সংস্কারের দাবিতে আয়োজিত এই আন্দোলনে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এতে আন্দোলনরত কয়েকজন ছাত্র ও সাধারণ মানুষ গুরুতর আহত হন।
গুলিবিদ্ধ আহতদের মধ্যে রয়েছেন—আব্দুল্লাহ আল মামুন, বকুল খন্দকার, মাসুদ রানা, রেজওয়ান আহমেদ, আবু হানিফ মন্ডল, মিনহাজুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, লিটন চন্দ্র শীল, মিজানুর রহমান, রাব্বি হাসান শুভ ও কুদরত আলী। আহত প্রত্যেকের কাছে গুলিবিদ্ধ হওয়ার ছবি, ভিডিও, ও চিকিৎসার কাগজপত্র থাকলেও গেজেটে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
আহত কুদরত আলী বলেন, “আমার পিঠে গুলি লেগেছিল, এখনও ব্যথায় ঘুমাতে পারি না। চিকিৎসার জন্য ধার করেছি, ফেরত দেওয়ার কোনো উপায় নেই। সরকার যদি একটু সাহায্য করত, মানুষের মতো বাঁচতে পারতাম।”
আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আমি বুকে গুলিনিয়ে চলছি, আমার সন্তানও গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। সরকারের কাছে আবেদন, আমাদের স্বীকৃতি দিন, পাশে দাঁড়ান।”
সরকার ইতোমধ্যে রাজশাহী বিভাগে ১,০৯৩ জন ‘জুলাই যোদ্ধা’ এবং সারা দেশে মোট ২২,৯০৭ জন আহত ও ১,৪০১ জন শহীদের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
‘ওয়ারিওরস অফ জুলাই’-এর বগুড়া জেলা শাখার আহ্বায়ক মসফিকুর রহমান সোহাগ জানান, “আমাদের অসাবধানতার কারণে অনেকের নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে এমআইএস পোর্টাল খোলার পর বাদ পড়া ব্যক্তিরা আবেদন করতে পারবেন।”
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক খান বলেন, “বর্তমানে অনলাইন পোর্টাল বন্ধ রয়েছে। তবে পুনরায় পোর্টাল খুললে যাচাই-বাছাই করে নতুন তালিকা পাঠানো হবে।”
বঞ্চিতদের স্বীকৃতি না পাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হয়েছে। এলাকাবাসী দ্রুত গুলিবিদ্ধ সত্যিকারের সংগ্রামীদের স্বীকৃতি ও আর্থিক সহায়তার দাবি জানিয়েছে।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর