
মা রুমি'র বয়স এখন ৫০ বছরের কাছাকাছি। সাড়ে ৩ বছর আগে তিনি তার ছোট ছেলে আশিকুর রহমান আশিক এর বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে চলে গিয়েছিলেন। সে থেকে তিনি নিখোঁজ।
এতদিন পর বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) তার ছোট ছেলে খুঁজে পেয়েছেন। কিশোরগঞ্জ শহরের পাগলা মসজিদের সামনে একটি গাছের নিচে মা'কে খুঁজে পান ছেলে আশিক। এসময় আপস্নুত হয়ে পড়েন ছেলে।
আশিকের মা রুমি'র বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া এলাকায়। তার ৪ ছেলের মধ্যে আশিক হলো সবার ছোট।
আশিকুর রহমান আশিক বলেন, তার মা রুমি'র স্বামীর সাথে ২০ বছর আগে ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর থেকে স্বামীর কথাবার্তা চিন্তা করতে করতে আস্তে আস্তে মাথার ব্রেনে সমস্যা সৃষ্টি হতে থাকে। পরে সাড়ে ৩ বছর আগে হঠাৎ একদিন আমার মা বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসে নাই।
পরে আমি অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছি কিন্তু আমার মা-কে পায় নাই। আমি একজন গাড়ির ড্রাইভার। আমি অনেক জেলায় গাড়ি নিয়ে গিয়েছি সেখানেও মা-কে খুঁজেছি কিন্তু পাই নাই। তবে আমি কখনোই কিশোরগঞ্জ জেলায় গাড়ি নিয়ে আসি নাই তাই এখানে খুঁজা হয় নাই।
আশিক আরো বলেন, গতকাল আমি ফেসবুকে আমার মায়ের একটা ভিডিও দেখতে পায়। ভিডিওটি দেখেই আমি আমার মা-কে চিনতে পেরেছি। সেই ভিডিওতে দেখলাম আমার মা কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের সামনে একটি গাছের নিচে থাকে। তাই আমি আজ সেই ঠিকানা মত এসে আমি আমার মা'কে খুঁজে পাই। এই যেন আমি আমার মাকে পাই নাই আমি আমার পৃথিবী খুঁজে পেয়েছি। এতে আমি ভীষণ খুশি যা আমি বলতে পারবো না।
তিনি আরো বলেন, 'আমার মা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। বাসা থেকে বের হয়ে মা নিখোঁজ হন। বিভিন্ন জায়গায় তাকে খুঁজেছি। এখানকার লোকজনের আশ্রয়ে এবং তাদের দেওয়া খাবার খেয়ে মা এত দিন বেঁচে আছেন। আমি তাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। আর যারা আমার মা'কে খুঁজে পেতে ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট দিয়ে সহযোগিতা করেছেন তাদের কাছেও চিরকৃতজ্ঞ।
আশিক তখন হারিয়ে যাওয়া মাকে চিনতে পেরে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। দীর্ঘ সাড়ে ৩ বছর পর মা-ছেলের সাক্ষাতের খবরে এলাকার লোকজন ভিড় জমাতে থাকেন।
এলাকার লোকজন বলেন, এই পাগলিরে দেখতাম পাগলা মসজিদের সামনে সব সময় বসে থাকতে, শুয়ে থাকতে। মানুষ যা দিতো তাই খেয়ে থাকতো।
কিন্তু আজ এই পাগলির ছেলে তাকে নিতে এসেছে এতে আমরা এলাকাবাসী হিসেবে অনেক খুশি। আর সে পাগলের বেসে থাকলেও তার মা তার ছেলেকে সহজে চিনতে পেরেছেন। এটাও দেখে আমাদের মাঝে অনেক খুশি লেগেছে। আমরা দোয়া করি মা-ছেলে যেন বাকিটা জীবন ভালো ভাবে থাকতে পারে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর