
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পদ্মপুরাণ বা মনসা গানের আসরগুলো দিনদিন কালের বিবর্তনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এক সময় পদ্মপুরাণ বা মনসা গানের ব্যাপক দর্শক প্রিয়তা ছিল।
গানের সঙ্গে সঙ্গে অসাধারণ নৃত্য ও সংলাপে এসেছে গদ্যছন্দে। মা মনসা ও নাগের জন্ম, দেবতার তুষ্টি,স্বামী ভক্তি আর ভালোবাসার কাহিনিই হলো আবহমান বাংলার ভাসান গানের উপজীব্য।সাধারণত মানুষের মনো বাসনা পূরণের জন্যই এই গানের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
তারই ধারাবাহিকতায় নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার পৌর এলাকার নওশেরা গ্রামের নিমাই চন্দ্র প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এবং তার মনোবাসনা পূরণের আশায় নিজ বাড়িতে সাতদিন ব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে মোট ১১ থেকে ১২ জন শিল্পী পদ্মপুরাণ গান ও গীতিনাট্য পরিবেশন করেছেন।
এতে প্রাচীন ঐতিহ্য মেনে নারী সেজে পুরুষদের অভিনয়ে দূরদূরান্তর থেকে আসা আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকার শতশত শ্রোতা দর্শক এই গান শুনে মুগ্ধ হয়েছে। এ অনুষ্ঠানের বেহুলা-লখীন্দর ও শিব-পার্বতী কিশোরী মেয়েদের বর-কনে সাজিয়ে বিয়ের অসাধারণ মুহূর্তটা উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করে তোলেন।গানের শিল্পী জেকের আলী ও শিমুল বলেন, পদ্মপুরান মূলত বেহুলা আর লখীন্দরের গীতনাট্য। তবে আগের মত এই গান আর হয়না।
কোন ব্যক্তি বা পরিবার মনের আশা পূরণের জন্য এই গানের আয়োজন করে। তারা আরো বলেন আমরা এই গান করেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। তবে এখন এই গানের চাহিদা কমে যাওয়ায় আমরা কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। তাই তারা সরকারের কাছে এই পুরানো ঐতিহ্য ধরে রাখতে সহযোগিতাও কামনা করেছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, আমরা সেই উঠতি বয়সে এ গান শুনেছিলাম। আগে গ্রামে এ গানগুলো বেশ হতো। এখন আর হয় না। অনেক বছর পর এখানে দেখে ভালোই লাগলো। তারা আরও জানান, পদ্মপুরাণ মূলত বেহুলা আর লখীন্দরের গীতনাট্য। সাধারণত রাত জেগে এটি পরিবেশন করা হয়।
এলাকাভেদে এই গানের নাম আলাদা আলাদা। বিভিন্ন অঞ্চলে এ গান পদ্মপুরাণ গান,পদ্মার নাচন, বেহুলার নাচাড়ি, কান্দনী বিষহরির গান নামে পরিচিত।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর