• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৫৬ মিনিট পূর্বে
আব্দুল লতিফ রঞ্জু
পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৫ এপ্রিল, ২০২৫, ০৬:০১ বিকাল
bd24live style=

পাবনায় জি আর চাল বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

পাবনার চাটমোহরে বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে জি আর চাল বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কোন কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে চাউল উত্তোলন করা হলেও জানে না প্রতিষ্ঠানটির সদস্যরা। ভুয়া কমিটি দাখিল করে চাউল উত্তোলন করে কালোবাজারে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।

আবার এক ব্যক্তি একাধিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসাবে চাল উত্তোলন করেছেন। বিষয়টি জানাজানি হবার পর ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। তারা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, চাটমোহর উপজেলায় ১১৮টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন কাজে জি আর প্রকল্পে প্রায় ১৪১ মেট্রিকটন চাউল বরাদ্দ দেয় জেলা প্রশাসন।

তার মধ্যে ফৈলজানা ইউনিয়নের কেশকিছু সমজিদ মাদ্রাসা ও এতিমখানার তালিকা অনুযায়ী খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পবাখালী দক্ষিণপাড়া মহিলা হাফিজিয়া মাদ্রাসা, পবাখালী রোকেয়া নুরুল মাদ্রাসা, দেলোয়ারা সামাদ নুরানী কিন্ডার গার্টেন (মক্তব) এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আব্দুস সামাদ এবং তার ছেলে তৌফিক ইমাম পবাখালী নুরানী কিন্ডার গার্টেনের সভাপতি।

এই চারটি প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সাড়ে ১০ মে. টন। তাদের পিতা পুত্রের চারটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শুধু মাত্র পবাখালী রোকেয়া নুরুল মাদ্রাসার অস্তিত্ব পাওয়া যায়। বাকি তিনটি প্রতিষ্ঠানের কোনো অস্তিত্ব নাই। ভুয়া কমিটি তৈরি করে চাউল উত্তোলনপূর্বক অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।

এদিকে দিঘুলিয়া হাসান হোসেন (রহঃ) জামে মসজিদ এবং দিঘুলিয়া পুরাতন বড় জামে মসজিদ এর সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম। এই দুটি মসজিদে বরাদ্দ পাওয়া গেছে সাড়ে চার মে. টন। এর মধ্যে দিঘুলিয়া পুরাতন বড় জামে মসজিদের অস্তিত্ব নাই। ভুয়া কমিটি দাখিল করে চাউল আত্মসাৎ করা হয়েছে।

এছাড়া মিনহাজ মোড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, পবাখালী দক্ষিনপাড়া বাইতুল আমান জামে মসজিদ এর সভাপতি সাইফুল ইসলাম। এর মধ্যে মিনহাজ মোড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের অস্তিত্ব নাই। এই দুটি প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ পেয়েছে সাড়ে পাঁচ মে. টন চাল।

পবাখালী নতুন জামে মসজিদ ও পবাখালী দক্ষিনপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি সাইফুল ইসলামের ভাতিজা মনিরুল ইসলাম। এরমধ্যে পবাখালী দক্ষিনপাড়া জামে মসজিদের নামে ভুয়া কমিটি দাখিল করে চাউল উত্তোলন করা হয়েছে। ফরিদা শামসুল মহিলা হাফিজিয়া মাদ্রাসার সভাপতি সাইফুল ইসলামের ভাগনে আজিবর রহমান দেড় টন বরাদ্দ পেয়েছে। অথচ এই নামে কোনো প্রতিষ্ঠান নাই।

পবাখালী লালন অ্যাকাডেমির নামে দেড় টন চাউল উত্তোলন করেছেন সভাপতি হিসাবে সরোয়ার হোসেন। অথচ এই নামে কোনো একাডেমি নাই। তবে এলাকায় একটি মাজার আছে যার সাথে এটির সংশ্লিষ্টতা নেই। মাজার কমিটির লোকজন জানে ই না এই নামে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

পবাখালী মাজারের সভাপতি নায়েব আলী জানান, 'আমাদের মাজারের নামে কোনো বরাদ্দ পাইনি। পবাখালী লালন অ্যাকাডেমির নামে চাউল তুলে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে মনে করছি।'

কুঠিপাড়া জামে মসজিদের কোষাধ্যক্ষ ও মুয়াজ্জিন মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, 'আমার কাছ থেকে উপজেলার একজন ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে বলেছিল মসজিদের নামে অনুদান আসবে, তাই দিছিলাম। পরে একদিন গিয়ে আমার হাতে ছয় হাজার টাকা দিয়ে আসছে। কত কি বরাদ্দ আসছে তার কিছুই জানি না। পরে ওই টাকা মসজিদের ফান্ডে জমা রেখেছি।'

এরকমভাবে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নাম দিয়ে ভুয়া কমিটি তৈরি করে চাউল বরাদ্দ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে প্রায় সারা জেলা জুড়ে। কোন কোন প্রতিষ্ঠানের নামে নিজেরা কমিটি তৈরি করে চাউল উত্তোলন করেছেন। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানের আসল কমিটির লোকজন জানেই না। কিছু প্রতিষ্ঠানের কমিটির লোকজনকে ম্যানেজ করতে কিছু টাকা হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুস সামাদ বলেন, ‌'যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। এখন কি করব বলেন, যারা ওটা করছে তারা তো করেই ফেলছে। ওসব তো বলে আর লাভ নাই। আপনার সাথে সাক্ষাতে কথা বলব।'

আরেক অভিযুক্ত মনিরুল ইসলাম বলেন, 'মসজিদ একটাই নাম দুইটা। একবার জালসার জন্য আর একবার ইফতার পার্টির জন্য আবেদন করা হয়েছিল। প্রথমবার যে নাম দিছিলাম দ্বিতীয়বার আর মনে ছিল না। ওইভাবে মানে নামটা দেওয়া হইছিল। তবে টাকাটা মসজিদ কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।'

অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম বলেন, ’দুইটা মসজিদের নাম নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় আমরা শুধু একটা মসজিদের চাল তুলেছি। আরেকটা মসজিদের চাউল তোলা হয়নি।’ এছাড়াও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বানানো কমিটির সভাপতির সাথে যোগাযোগ করে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মূসা নাসের চৌধুরী বলেন, 'ফৈলজানা ইউনিয়নের চাউল বরাদ্দের অনিয়মের বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তার আগেই আমরা তদন্ত করতে গিয়ে বিষয়গুলো প্রকাশ পেয়েছে। 

আর অভিযোগের বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দিয়েছি। তাদের জবাব সন্তোষজনক না হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com