
সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সংস্কারসহ তিন দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে অনশনে বসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একদল শিক্ষার্থী। এদিকে অনশনের দ্বিতীয়দিনে সংহতি জানিয়ে পিএসসিতে কর্মরত দুর্নীতিবাজদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটির মূখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে ঢাবির সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনে বসা ওই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ওই দাবি জানান। এসময় সারজিস আলম বলেন, আজ থেকে নয় মাস আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই স্থানে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেটাই দেশব্যাপী গণঅভ্যুত্থানে রূপ নিয়েছিল। বাংলাদেশে চাকরিপ্রত্যাশীরাই আগামীর বাংলাদেশ গঠন করবে।
২০১৮ সালে যে সহযোদ্ধাদের সাথে ২৪শে'র আন্দোলন করেছিলাম, সেই সহযোদ্ধাদের কেন গণঅভ্যুত্থানের পরেও আন্দোলনে নামতে হয়েছে? অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, কোটা সংস্কারের জন্য হওয়া আন্দোলনের পর পিএসসির মতো প্রতিষ্ঠানে কোনো সংস্কার হয়নি। সংবাদমাধ্যম ও গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, আবেদ্য আলী চক্রসহ বিভিন্ন চক্রের মাধ্যমে কিভাবে পিএসসিতে দুর্নীতি হয়েছে। এছাড়াও যারা প্রশ্ন পেয়ে ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষায় পাশ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? হাসিনা যেমন একা স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারেনি, তেমনই পিএসসির আবেদ্য আলী একা নন। এসব চক্রের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পিএসসির যৌক্তিক দাবি নিয়ে যখন শিক্ষার্থীরা পিএসসিতে গিয়েছিল, তখন তাদের কথা শোনা যেত। কিন্তু তা না করে তাঁদের উপর হামলা করা হয়েছে। আজ এই রাজু ভাস্কর্য থেকে বলতে চাই, পিএসসিতে আমার সহযোদ্ধাদের উপর যে বা যারা হামলা করেছে, তাদের অতি দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। তাদের যৌক্তিক দাবি দাওয়া যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মেনে নেওয়া যায়, সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। যদি পুনরায় গায়ে হাত দেওয়ার মতো কোনো প্রক্রিয়া আসে, তাহলে তার ফলাফল ভিন্ন হবে। ইতোমধ্যে পিএসসিতে ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭তম বিসিএসের প্রক্রিয়া চলমান দেখতে পাচ্ছি। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সেগুলো সমাধান না করাকে এই সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছি।
পিএসসির সংস্কারের দাবিতে আমাদের সহযোদ্ধারা রাজুতে যে অনশন করছে, তার পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। ৪৬তম বিসিএসে যারা প্রশ্নপত্র পেয়ে পরীক্ষায় পাস করেছে, তাদের বাদ না দিয়ে পুনরায় লিখিত পরীক্ষায় বসানো প্রহসনের নামান্তর। এর আগে বিসিএসে রাজনৈতিক যে খেলা হতো, সেই খেলা বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে কালপ্রিটদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ঢাবির পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শাহ আলম স্নেহ, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল করিম এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মো. সিরাজুস সালেহীন (সিয়ন) আমরণ অনশনে বসেন। তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
তাদের অন্য দুই দাবি হল ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা দ্রুত শেষ করা ও ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানো।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর