• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৩৭ সেকেন্ড পূর্বে
আবু রায়হান সরকার
নোয়াখালি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৬ এপ্রিল, ২০২৫, ০৬:৫০ বিকাল

নোয়াখালীতে নদী ভাঙন রক্ষার দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মানববন্ধন

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ছোট ফেনী নদীর ভয়াবহ ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। এসময় বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি হারিয়ে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

শনিবারা (২৬ এপ্রিল) বিকেলে মুছাপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জনতা বাজারে স্থানীয় এলাকাবাসী, সনাতন ধর্মাবলম্বী ও যুব সমাজের উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অনেকে কাফনের কাপড় পরে আত্মাহুতির ঘোষণা দেন।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. ফখরুল ইসলাম।তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাহিনীর অব্যাহত বালু উত্তোলনের ফলে গত ২৬ আগস্ট ছোট ফেনী নদীর ওপর নির্মিত মুছাপুর ২৩ ভেন্ট রেগুলেটর ভেঙ্গে যায়। এতে লোনা পানি ঢুকে এ অঞ্চলের এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমির ফসল ফলানো যাচ্ছে না। উপরন্তু আশপাশের শত শত বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতন হওয়ার পরও এ এলাকায় বালু দস্যুতা বন্ধ হয়নি। আমাদের দলের এক শ্রেণির দুর্বৃত্ত এখন অবাধে বালু তুলে নদী ভাঙন বৃদ্ধি করেছে। আমি বিএনপির হাই কমান্ডের কাছে অনুরোধ করবো, আমাদের দলের যারা এ বালু সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিন।

ফাতেমা বেগম নামে এক ভুক্তভোগী নারী বলেন, গত ১৪ বছরে আমার বাড়ি চারবার ভেঙ্গে গেছে। আমার আর কিছুই নাই। সামনে বর্ষা মৌসুমে নদী পাড়ের আর কেউ বসবাস করতে পারবে না। আমরাতো বাস্তু হরা হয়ে গেছি। আমাদের পরে যে-সব বাড়ি আছে তারা খুবই অসহায়। তাদের দিকে সরকার যাতে একটু দয়াবান হয়। নদী শাসন করে এখানে অচিরেই একটি রেগুলেটর স্থাপনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সহায়তা কামনা করছি।

কাফনের কাপড় পরে সাহাব উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘বাড়িঘর  ফসলি জমি হারিয়ে আমি কাফনের কাপড় পরে ফেলেছি। আমার বেঁচে থাকার আর স্বাদ নেই। সরকার যদি আমাদের দিকে নজর না দেয় পরিবারসহ আমরা আত্মাহুতি দেব।‘ এসময় তার সঙ্গে কাফনের কাপড় পরা অনেকে নদী ভাঙন রক্ষায় সরকারের পদক্ষেপের দাবি জানান।

মুছাপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি হাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম বলেন, রেগুলেটর ধসে যাওয়ার পর গত ৮ মাসে নোয়াখালীর মুছাপুর, চরহাজারী, চরপার্বতী ও ফেনীর সোনাগাজাীর চরদরবেশ ইউনিয়নের অন্তত ৫০০ বাড়ি, মক্তব, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ শত শত একর ফসলি জমি, রাস্তাঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আমরা এ অঞ্চলের লোকজন চরম অসহায় এবং মানবেতর জীবন যাপন করছে। অনেকে বাড়ি হারিয়ে পরিবার নিয়ে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। আমরা এর প্রতিকার চাই।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সাবেক কৃষি কর্মকর্তা পুষ্পেন্দু বড়ুয়া বলেন, এই রেগুলেটরি বঙ্গোপসাগরের সন্দীপ চ্যানেলের কাছাকাছি ছোট ফেনী নদী হয়ে বড় ডাকাতিয়া নদীর মুখে অবস্থিত। কুমিল্লা জেলার ছয়টি উপজেলা- কুমিল্লা সদর, সদর দক্ষিণ, বরুড়া, লাকসাম, নাঙ্গলকোট, চৌদ্দগ্রাম; ফেনী জেলার ফেনী সদর উপজেলা, দাগনভূঞা, সোনাগাজী ও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা- এই দশটি উপজেলার বৃষ্টির পানি এই মুছাপুর রেগুলেটর হয়েই যেত। আবার বোরো মৌসুমের সেচ কার্যক্রম এই মুছাপুর ক্লোজারের জমানো মিষ্টি পানির মাধ্যমে সম্পন্ন হতো। এই তিন জেলার দশটি উপজেলার আনুমানিক এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমি এই রেগুলেটরের ক্যাচমেন্ট এরিয়াতে পড়ে। এটা ভাঙার ফলে রাষ্ট্রের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘মুছাপুর রেগুলেটরি ভাঙার অন্যতম দুটি কারণ দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা রেগুলেটরের ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরত্বে বালি তুলে শত শত কোটি টাকার বালি ব্যবসা করেছেন। ফলে এই রেগুলেটরের গোড়ার ভিত্তি দুর্বল হয়েছে এবং ভাঙার মতো এই ভয়ানক পরিণতি বরণ করতে হয়েছে। এই রেগুলেটরের মাধ্যমে তিন জেলার দশটি উপজেলার প্রায় একলাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হতো। এবছর মিষ্টি পানি না থাকার কারণে এই একলাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ সম্ভব হবে না। এতে রাষ্ট্রের প্রায় ১৭শ কোটি টাকার ক্ষতি হবে। সুতরাং, এই ১০ উপজেলার মানুষের বাস্তু নিরাপত্তা, কৃষিসহ সর্বোপরি রাষ্ট্রের প্রয়োজনে অতি দ্রুত এ রেগুলেটরের পুনঃনির্মাণ জরুরি।

জানতে চাইলে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, মুছাপুর রেগুলেটর নির্মাণে সরকার আন্তরিক। কিন্তু এটি নির্মাণে অন্তত দুই মৌসুম সময় দিতে হয়। তারপরও আমরা সমীক্ষাসহ নকশা তৈরির কাছ করে যাচ্ছি। আগামী শুষ্ক মৌসুমে জরুরি ভিত্তিতে মুছাপুর রেললাইন নির্মাণ কাজ শুরু হতে পারে।

অনুষ্ঠানে যুবদল নেতা হাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীমের সভাপতিত্বে ও উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. আলমগীর মিয়ার সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনিছুল হক, সদস্য আফতাব আহমেদ বাচ্চু, একরামুল হক মিলন মেম্বার, মাস্টার আবু নাছের, ফেনী জেলা কৃষক দলের সেক্রেটারী খোকন চেয়ারম্যান, সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম চেয়ারম্যান প্রমুখ।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com