
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় কাল বৈশাখী ঝড়ে ৪ শতাধিক ঘর বাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্তত ৪০ হেক্টর জমির ভুট্টা ফসল নষ্ট হওয়াসহ ব্যাপক ভুট্টা ও ধান হেলে পড়েছে।
এছাড়া প্রায় ১ হাজার গাছ ভেঙ্গে পরাসহ প্রায় ১ শত স্থানে বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে যাওয়াসহ ১০ টি বিদ্যুতের খুটি ভেঙ্গে পড়ে গোটা উপজেলা ১৬ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বিহীন রয়েছে। আহত একজন কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রচণ্ড ঝড়ো বাতাস শুরু হয়। পরে বৃষ্টিসহ ঝড় শুরু হয়। ২০ মিনিটের ঝড়ে কিশোরগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ঘর বাড়ি, গাছ, ফসল লন্ডভন্ড হয়। শ্মমান নামক স্থানে নীলফামারী টু রংপুর রোডের মাঝে দুটি গাছ ভেঙ্গে রাতে দুই ঘণ্টা যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ ছিল। পরে ফায়ার সার্ভিস গাছ দুটি অপসারণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ১ হাজার গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। কিশোরগঞ্জ প্রধান বাজারে ঝড়ের সময় একটি বড় শিমুল গাছ ভেঙ্গে পড়ে অল্পের জন্য চার জন প্রাণে রক্ষা পেয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানগণের তথ্য মতে, ঝড়ে ৯টি ইউনিয়নে প্রায় ৪ শতাধিক ঘর বাড়ির চাল উড়ে গেছে, অনেকের বাড়ি ভেঙ্গে যাওয়াসহ বাড়ির উপরে গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। এছাড়া প্রায় ১ হাজার গাছ ভেঙ্গে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভুট্টা ও ধানের ক্ষতিসহ বৈদ্যুতিক খুটি ভেঙ্গে পড়াসহ প্রচুর তার ছিড়ে গেছে। ফলে রাত থেকে বিদ্যুতের দেখা নেই।
সরেজমিনে বিভিন্ন স্থানে ঘর বাড়ির চালা উড়ে যাওয়া, ভেঙ্গে পড়া, গাছ গাছালি ভেঙ্গে পরার দৃশ্য দেখা গেছে। এছাড়া ঝড়ে ফসল হেলে পড়েছে। বৈদ্যুতিক খুটি ভেঙ্গে পড়াসহ প্রচুর স্থানে তার ছিড়ে গেছে।
নেসকোর আবাসিক প্রকৌশলী সামসুল আরেফীন জানান, বৈদ্যুতিক ৪টি খুটি ভেঙ্গে পড়েছে, হেলে গেছে ১০টি খুঁটি, অসংখ্য তার ছিড়ে গেছে। ফলে শনিবার রাত ৯.২৫ মিনিট থেকে বিদ্যুৎ নেই। মেরামতের কাজ চলছে।
পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম নুরুজ্জামান জানান, পল্লী বিদ্যুতের ৬টি খুঁটি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেছে এবং ৬টি খুঁটি হেলে পরাসহ অসংখ্য তার ছিড়ে গেছে। এখন পর্যন্ত ১ শত স্থানে তার ছিড়ে যাওয়া ও গাছ পড়ে তারের ক্ষতি হওয়ার খবর পেয়েছি। মাঠে আমাদের লোকজন দ্রুত বিদ্যুৎ চালুর জন্য কাজ করছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার লোকমান আলম জানান, এখন পর্যন্ত ৩০ হেক্টর ভুট্টা খেত নষ্ট হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ধানসহ অন্যান্য ফসলের তেমন ক্ষতির হয়নি বলে এ অফিসার জানান।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা লতিফুর রহমান জানান, ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতির খবর পেয়েছি। আমি ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ থেকে ৬০টি বাড়ি ঘরের খোঁজখবর নিয়েছি। সকল ইউনিয়ন থেকে তথ্য আসলে সঠিক ক্ষয়ক্ষতির তথ্য বলা যাবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী হক জানান, ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েছি। আমাকে ফোনে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানরা ঘর বাড়ির চালা উড়ে যাওয়াসহ ঘর বাড়ি ভেঙ্গে পড়ার খবর দিয়েছে।
গাছ গাছালিসহ ফসলের ক্ষতির খবরও পাওয়া গেছে। তবে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নির্ণয়ে মাঠ থেকে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর