
নোয়াখালীর সদর উপজেলায় ‘জুলাই-গণঅভ্যুত্থানে’ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভীর ছোট ভাই শাহরিয়ার হাসান রিমন (১৬)–কে মধ্যযুগীয় কায়দায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। স্থানীয়রা তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সদর উপজেলার মাইজদী শহরের বার্লিংটন মোড়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে। রিমন নোয়াখালী পৌরসভার বার্লিংটন মোড় এলাকার বাসিন্দা ও ব্যাংকার মো. জামাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্থানীয় হরিনারায়ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।
রিমনের মা ফরিদা ইয়াসমিন জানান, দুই দিন আগে রিমনের স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে বহিরাগত কয়েকজন কিশোরের ঝগড়া হয়। রিমন বিষয়টি আমাকে এবং স্কুলের শিক্ষকদের জানায়। সে তাদের জানায়, “আমি শহীদের ভাই। আমি চাই না আর কোনো মায়ের বুক খালি হোক। দেশে আর কোনো ঝামেলা হোক। আমি জানি স্বজন হারানোর বেদনা কী।” এরপর সে ঝগড়ার বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়।
তবে এতে ক্ষুব্ধ হয় বহিরাগত কিশোরেরা। রবিবার বিকেলে স্কুল থেকে বাসায় ফেরার পথে রিমনকে ডেকে নিয়ে পেছন থেকে অতর্কিতভাবে পিঠ ও মাথায় কুপিয়ে জখম করে তারা। স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
ফরিদা ইয়াসমিন আরও জানান, রিমনের শরীরে ছয়টি ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, যার মধ্যে তিনটি পিঠে এবং একাধিক আঘাত ফুসফুস পর্যন্ত পৌঁছেছে। হামলাকারীরা প্রথমে মনে করেছিল রিমন মারা গেছে। পরে যখন তারা জানতে পারে রিমন বেঁচে আছে, তখন পুনরায় তাকে মারার উদ্দেশ্যে হাসপাতালে যায়। তবে রিমনের বন্ধুদের তৎপরতায় তারা সফল হয়নি।
রিমনের স্কুলের বন্ধুরা হামলাকারীদের পরিচয় জানে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী জেলা শাখার সমন্বয়ক আরিফুর ইসলাম বলেন, “বার্লিংটন মোড় থেকে বাড়ি ফেরার পথে শহীদ রিজভীর ছোট ভাই রিমনের ওপর কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত জড়িতদের গ্রেফতার না করলে কঠোর আন্দোলনে যাবে ছাত্রসমাজ।”
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত ১০টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির নেতৃবৃন্দ মাইজদীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল ফারুক জানান, “হামলার ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলমান। জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।”
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর