
মাননীয় কৃষি উপদেষ্টা মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণে ১০ দফা দাবিসহ এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে কৃষক ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকার তৃতীয় তলায় মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন- জুলাই-আগস্ট ২০২৪-এর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল হিসেবে বিগত সরকারের পতনের পর আপনার মতো ব্যক্তিত্বকে রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে পেয়ে দেশের আপামর কৃষক সমাজ আনন্দিত ও গর্বিত।
আমরা বিশ্বাস করি, আপনার দৃঢ় নেতৃত্বে দেশের কৃষি খাত একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি পাবে। তবে শ্রদ্ধার সঙ্গে জানাতে চাই, দেশের দুই-তৃতীয়াংশ জনগণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল হলেও কৃষকরা এখনও অবহেলিত এবং ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত।
কৃষিই আমাদের একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা আমাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। কৃষিপণ্য বিপণন ব্যবস্থায় চরম বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। স্থানীয় পর্যায়ে ফড়িয়া, পরিবহন সংশ্লিষ্টদের অসহযোগিতা এবং মজুদকারী সিন্ডিকেটের কারণে আমরা বিনিয়োগকৃত পুঁজি হারাচ্ছি।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দ যৌক্তিকভাবে নিম্নোক্ত ১০ দফা দাবি উপস্থাপন করেনঃ
১) আলু, পেঁয়াজ কমিশন গঠন, উপজেলা ভিত্তিক কাঁচামাল সংরক্ষণাগার ও রপ্তানি কেন্দ্র স্থাপন।
২) ঢাকাসহ সারাদেশে কৃষকের বাজার স্থাপন।
৩) কৃষি প্রণোদনা ও কৃষিঋণ বিতরণ সহজীকরণ এবং সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি।
৪) সিন্ডিকেটমুক্ত বাজার ব্যবস্থা গড়ে তুলে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণ।
৫) চাঁদাবাজি ও টোলপ্রথা বাতিল এবং কৃষিপণ্য পরিবহনে রেলওয়ে বগি বরাদ্দ।
৬) কৃষকদের জন্য খাস ও পতিত জমি বরাদ্দ এবং বিশেষ ভাতা চালু।
৭) সরকারিভাবে কৃষিবীমা চালু এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান।
৮) সরকারি হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এবং বেসরকারি হাসপাতালে ৫০% ছাড়ে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত।
৯) জাতীয় সংসদ, জাতীয় কমিটি, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মাসিক সভায় কৃষক প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্তি।
১০) বীজ ও সার সিন্ডিকেটমুক্ত করা, ডিলারদের জন্য ছয় মাসের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা এবং প্রযুক্তি ও অ্যাপস আধুনিকায়ন।
সংবাদ সম্মেলনের শেষাংশে নেতৃবৃন্দ বলেন— উপরোক্ত দাবিগুলোর বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের কৃষকদের জন্য একটি মাইলফলক স্থাপন সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ। তাই দেশের কৃষকদের অভিভাবক হিসেবে আপনার কাছে আমাদের এই আকুল আবেদন, যেন আপনি এসব দাবির বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর