• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৮ মিনিট পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:৫৪ দুপুর

যেকোনো মুহূর্তে পাকিস্তানে আক্রমণ চালাতে পারে ভারত

ছবি: সংগৃহীত

জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক   হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত চরমে পৌঁছেছে এবং এই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। 

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ উত্তেজনা নিরসনসহ সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। তবে ভারত এখন সংঘাত এড়াতে নয় বরং পাকিস্তানে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে — এমনটাই জানিয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

রোববার (২৭ এপ্রিল) প্রকাশিত সংবাদমাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশ্মিরে হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতোমধ্যে বিশ্বের এক ডজনেরও বেশি দেশের নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। পাশাপাশি দিল্লিতে অবস্থিত শতাধিক কূটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়মিত আলোচনা চালাচ্ছে।

তবে ভারতের এই প্রচেষ্টা মূলত আন্তর্জাতিক সহায়তা চাইতে নয়, বরং (পাকিস্তানে) সামরিক অভিযানের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চারজন কূটনৈতিক কর্মকর্তা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক ভাষণে মোদি সরাসরি পাকিস্তানের নাম না নিলেও “সন্ত্রাসী আস্তানাগুলো ধ্বংস করার” এবং “কঠোর শাস্তি” দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

এদিকে দুই দেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় টানা কয়েক রাত ধরে ছোট অস্ত্র দিয়ে গোলাগুলি হয়েছে বলে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। কেউ বলেছেন— গত তিন রাত ধরেই গোলাগুলি হয়েছে, আবার কেউ বলেছেন— গত তিন রাতের মধ্যে দু’রাতে গোলাগুলি হয়েছে।

অন্যদিকে কাশ্মিরে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে এবং সন্ত্রাসী হামলার সাথে জড়িতদের সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছে। সেখানে শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এর আগে পাকিস্তানের দিকে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধ করার ঘোষণা দেয় ভারত। সেই সঙ্গে পাকিস্তানি দূতাবাসের কিছু কর্মী ও ভারতে সফররত পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভারতের সাথে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো — বিশেষ করে কাশ্মির সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলওসি) যুদ্ধবিরতির চুক্তি — স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে ভারতে মুসলিম বিরোধী মনোভাবও বাড়ছে। কাশ্মিরের বাইরে অন্য শহরগুলোতে পড়াশোনা করা কাশ্মিরি শিক্ষার্থীরা ব্যাপক হয়রানির মুখে পড়ছেন এবং অনেকেই বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে আসছেন।

এদিকে হামলার পাঁচ দিন পরও ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নাম ঘোষণা করেনি এবং হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের জড়িত থাকার পক্ষে খুব কম প্রমাণ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে পাকিস্তান সরকার এই হামলায় নিজেদের জড়িত থাকার অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছে।

মূলত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে ভারতীয় কর্মকর্তারা পাকিস্তানের অতীতের সন্ত্রাসবাদে সহায়তার ইতিহাস তুলে ধরেছেন। তারা জানান, সর্বশেষ এই হামলার ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং হামলাকারীদের পাকিস্তানের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে এমন কিছু প্রযুক্তিগত প্রমাণ পাওয়া গেছে।

বিশ্লেষক ও কূটনীতিকদের মতে, এখন পর্যন্ত শক্ত প্রমাণের অভাব দুটি সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়: হয় ভারত আরও তথ্য সংগ্রহের জন্য সময় নিচ্ছে, নয়তো বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে তারা মনে করছে— আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বিস্তারিত ব্যাখ্যা না দিয়েই পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।

অবশ্য ভারত ও পাকিস্তান — উভয়েই পরমাণু শক্তিধর দেশ হওয়ায় সামরিক সংঘাত দ্রুত বড় ধরনের বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে। তবে বর্তমানে ভারতের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক চাপের “তোয়াক্কা অনেক কম”।

ইরান ও সৌদি আরব দুই পক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছে এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন। জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন উভয়েই সংযম ও সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ বড় শক্তিগুলো এখন অন্য সংকট নিয়ে ব্যস্ত, ফলে ভারত অনেক দেশ থেকে “সমর্থন” পাওয়াকে কার্যত তার ইচ্ছামতো ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছে।

যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ভারত ও পাকিস্তান উভয়ের বন্ধু হলেও দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র বর্তমান পরিস্থিতিতে কতটা সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখবে, তা স্পষ্ট নয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম তিন মাস পার হয়ে গেলেও এখনও ভারতে কোনও মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আর এটি ভারত বা দক্ষিণ এশিয়াকে ট্রাম্প প্রশাসনের অগ্রাধিকারের তালিকায় নিচে থাকার ইঙ্গিত দেয়।

এমনকি যদি যুক্তরাষ্ট্র বা অন্যান্য শক্তিধর দেশ এই সংঘাতে নিজেদের ঢুকিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করে, তবুও তাদের প্রভাব সীমিত থাকতে পারে। কারণ ভারত ও পাকিস্তান ইতোমধ্যেই কাশ্মির নিয়ে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ করেছে। উভয় দেশই কাশ্মিরের সম্পূর্ণ অংশ দাবি করলেও তারা কার্যত একটি অংশ শাসন করে এবং নয়াদিল্লি এই বিরোধটিকে কেবল পাকিস্তানের সাথে দ্বিপাক্ষিক সমস্যা হিসাবে দাবি করে থাকে।

মূলত ২০১৯ সালে হওয়া কাশ্মিরের আগের বড় সংঘাতের সময়ের মতোই এবারের হামলা নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের প্রথমিক প্রতিক্রিয়া একই রকম। তখন অবশ্য জইশ-ই-মুহাম্মদ নামের পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠনের জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট ছিল।

সে সময় ভারত সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে বিমান হামলা চালায় এবং পরে পাকিস্তান পাল্টা হামলা চালিয়ে একটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে। পরে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ভারতীয় ওই পাইলটকে আটক করে।

এবার ভারত “বড় ধরনের কিছু” করার পরিকল্পনা করছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তবে পাকিস্তানও পাল্টা জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছে। পাকিস্তানও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ভারতের যেকোনও আক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তার চেয়ে বড় আঘাত হানবে তারা।

বিশ্লেষক ড্যানিয়েল মার্কির মতে, উভয় পক্ষই নিজেদের সংকট সামলানোর সক্ষমতা অতিরঞ্জিত করে দেখছে, ফলে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

এছাড়া, ২০১৯ সালের ঘটনার তুলনায় এবার হামলাকারী দলের পরিচয় ও সংখ্যা নিয়েও যথেষ্ট অনিশ্চয়তা রয়েছে। “রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট” নামে কার্যত এক অজ্ঞাত গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে ভারতীয় কর্মকর্তাদের অনানুষ্ঠানিক দাবি, এটি আসলে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার ছায়া সংগঠন।

ভারতের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শঙ্কর মেনন জানিয়েছেন, মোদি সরকারের জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই, কারণ ২০১৬ এবং ২০১৯ সালে কাশ্মিরে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানে বিমান হামলা চালিয়েছিল ভারত।

মোদি সরকার একণ চাপের মধ্যে রয়েছে, কারণ তারা কাশ্মিরকে সম্প্রতি আরও নিরাপদ এবং পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় একটি জায়গা হিসেবে উপস্থাপন করছিল, অথচ সেখানে বড় ধরনের নিরাপত্তা ত্রুটি দেখা দিয়েছে।

তবে মেনন বলেন, “আমি খুব একটা চিন্তিত নই কারণ, উভয় পক্ষই সংঘাতের একটি নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকতে পছন্দ করে।”

এখন পর্যন্ত পরিষ্কার প্রমাণ সামনে না এনেই ভারত পাকিস্তানের অতীতের “সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার” ইতিহাস তুলে ধরে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে অনেক কূটনীতিক একে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন।

একজন কূটনীতিক পর্যন্ত মন্তব্য করেছেন, “কেবল অতীতের রেকর্ডের ওপর নির্ভর করে কি আপনি পরমাণু অস্ত্রধারী প্রতিবেশীর সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করবেন?”

সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com