
ভারতের অভ্যন্তরে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় স্তম্ভিত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনার মধুপুর এলাকা এবং বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার গোপালপুর সীমান্ত অঞ্চল। এ ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা দীর্ঘদিন ধরেই চলমান একটি দুঃখজনক বাস্তবতা। একের পর এক এসব হত্যাকাণ্ডের কোনো সুষ্ঠু তদন্ত বা বিচার না হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদ।
এক বিবৃতিতে পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মোঃ মোস্তফা আল ইহযায বলেন, “সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা একটি চিরাচরিত ও নিন্দনীয় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ১৬ বছরে প্রায় ৭০০ বাংলাদেশিকে সীমান্তে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। কখনো পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়, আবার কখনো লাশ কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এসব কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়-এটি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত চক্রান্ত। এতে দেশের সার্বভৌমত্ব চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “সীমান্তে অবাধ বিচরণ ও অনুপ্রবেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত নিরাপত্তা আইনের লঙ্ঘন। কিছুদিন আগে দেখা যায়, আরাকান আর্মি বাংলাদেশের ভেতরে প্রবেশ করে ‘জলকেলি উৎসব’ পালন করে এবং সেই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করে। আরাকান আর্মির রাজনৈতিক শাখা 'ইউএলএ' এবং স্থানীয় লোকজন ঘটা করে সেই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশের সীমান্তে ১০ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করে এমন দুঃসাহসিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই ঘটনায় আমরা বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) কাছে অনতিবিলম্বে ব্যাখ্যা দাবি করছি। এই ঘটনাকে বর্তমান সরকার ও সামরিক বাহিনীর চরম ব্যর্থতা বলে মনে করি। এ ধরনের উদাসীনতা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি।”
এদিকে বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর সীমান্তে ভারতের অভ্যন্তরে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। গত রোববার সকালে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিজিবি। তবে তাঁর পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি তারা। নিহতের মরদেহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার মধুপুর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাংলাদেশের পাশে রয়েছে গোপালপুর গ্রাম।
যাদবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন জানান, “মৃত ব্যক্তি গোপালপুর গ্রামের ওবায়দুল হক। সে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। তবে কারা গুলি করেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রাত আনুমানিক ১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।”
এ প্রসঙ্গে সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের সমন্বয়কারী মোঃ সাইফুল আলম সরকার বিজিবি ৫৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল আলমের উদ্দেশে বলেন, “সীমান্তে বিএসএফের সঙ্গে কেবল পতাকা বৈঠক করলেই হবে না। সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধে এবং চোরাচালান প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে।”
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জাতীয় এর সর্বশেষ খবর