
চট্টগ্রাম নগরের ডবলমুরিং থানার দেওয়ানহাট মোড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধ ও হয়রানির প্রতিবাদে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান, ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখানে অভিযান পরিচালনা করে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও ছাত্র ফ্রন্টের নেতাসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন-বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার ইনচার্জ ও সংগ্রাম পরিষদের জেলা আহ্বায়ক আল কাদেরি জয়, ছাত্র ফ্রন্ট নেতা মিনহাজ উদ্দিন এবং রিকশাচালক মো. রুকন। হালিশহর থানায় আগের বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় তাদের আটক দেখানো হয়েছে।
জানা গেছে, সমাবেশটি আয়োজন করেছিল ‘ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ’। সংগঠনটির দাবি, এসব পরিবহণ লাখো মানুষের জীবিকার সঙ্গে জড়িত। সরকার যদি এদের জন্য নিবন্ধন, লাইসেন্স ও রুট পারমিটের ব্যবস্থা করে, তাহলে যানবাহনগুলো আরও নিরাপদ ও আধুনিক করা সম্ভব। এ নিয়ে তারা দীর্ঘদিন ধরেই ৭ দফা দাবি জানিয়ে আসছে।
ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব মনির হোসেন বলেন, আমরা বিক্ষোভ করতে গেলে পুলিশ উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের ব্যানার কেড়ে নেয় এবং মাইক ভাঙচুর করে। সেখান থেকে আমাদের আহ্বায়কসহ তিনজনকে আটক করে।
জানতে চাইলে ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকদের নামে কিছু ব্যক্তি সড়ক অবরোধ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছিলেন। আমরা যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি। তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তারা হালিশহর থানায় দায়ের হওয়া একটি নিয়মিত মামলার আসামি। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হচ্ছে।’
একের পর এক দুর্ঘটনা ও ট্রাফিক বিশৃঙ্খলার অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে ব্যাটারিচালিত রিকশা। গলিপথে সীমাবদ্ধ থাকা এই যান এখন প্রধান সড়কগুলোতেও অবাধে ছুটছে। ধীরগতির এ বাহনগুলো দ্রুতগামী গাড়ির সঙ্গে মিশে গিয়ে সিগন্যাল পয়েন্টে জ্যাম সৃষ্টি করে। বেপরোয়া এই যানের কারণে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ও হতাহতের খবর পাওয়া যায়।
সবশেষ গত ১৮ এপ্রিল রাতে চকবাজার থানার কাপাসগোলা এলাকায় একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা উল্টে গিয়ে পড়ে হিজড়া খালে। রিকশায় থাকা দুই নারী বেঁচে গেলেও, তাদের কোলে থাকা ৬ মাস বয়সি শিশু সেহরিজ নিখোঁজ হয়। পরদিন সকালে চাক্তাই খাল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে শোক। পাশাপাশি ক্ষোভের সঞ্চারও হয়।
এরপর নগরজুড়ে ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়। টানা কয়েকদিনের অভিযানে নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে জব্দ করা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশা। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ব্যাটারি চালকরা। তারা প্রতিদিনই নগরের কোথাও না কোথাও বিক্ষোভ করছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর