
রাকিবুল ইসলাম সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়নি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এমনই দাবি করছেন ১৫ মাস আগে মারা যাওয়া রাকিবুল ইসলামের বাবা মো. শাহীন হাওলাদার। তিনি তার ছেলে হত্যার সঠিক কারণে বের করতে মামলাটি নতুনভাবে পুনঃ তদন্তের পাশাপাশি ময়নাতদন্তের আহ্বান জানান।
নিহত রাকিবুল ইসলাম কচুয়া উপজেলার রঘুদত্তকাঠি গ্রামের শাহীন হাওলাদারের ছেলে। সে খুলনার রূপসা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (রূপসা ম্যাটস) থেকে পড়াশোনা শেষ করে স্থানীয় মাহমুদা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
শাহীন হাওলাদার জানান, কচুয়া উপজেলার বাধাল ইউনিয়নের আখি খাতুনের সাথে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর পরিবারের অজান্তেই রাকিব আখি খাতুনকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে আখির পরিবার ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। আখির ভাই-বাবা ও আত্মীয় স্বজনরা রাকিব এবং তার বাবাকে হুমকি দেয়। পরে ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর সকালে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের কাটাখালি আলফা কোম্পানির সামনে থেকে আমার ছেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর একমাত্র ছেলে রাকিবকে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডের সাথে তার স্ত্রী আখি খাতুন ও তার আত্মীয় স্বজন জড়িত রয়েছে বলে তিনি জানান।
শাহীন হাওলাদার বলেন, কাটাখালি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান, মুঠোফোনে জানায়, আমার ছেলে দুর্ঘটনায় মারা গেছে। ময়নাতদন্ত ছাড়াই ওইদিন রাত সাড়ে ১২টায় আমার ছেলের দাফন সম্পন্ন হয়। ওসি জানায়, আমার স্ত্রীর ভাই ওমর ফারুক ময়নাতদন্ত ছাড়াই, মরদেহ গ্রহন করেছে। কিন্তু আমার স্ত্রীর কোন ভাই নেই। এতেই সন্দেহ হয়, যে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমি অনেকবার কাটাখালি হাইওয়ে থানায় গেলে আমাকে কোনো সহযোগিতা করেনি। তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন নেতা আমাকে বিষয়টি নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা করতে নিষেধসহ হুমকি প্রদান করেন।
এক পর্যায়ে সরকার পরিবর্তনের পরে আমি আখি খাতুন, তার ভাই আলমাস জমাদ্দার, স্থানীয় রিপন শেখ, ওমর ফারুক জমাদ্দারসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করি। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআিইডি)কে তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু সিআইডির তদন্ত সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ হয়নি বলে জানান। তিনি জানান, আমার ছেলেকে যেহেতু ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন করা হয়েছে সেক্ষেত্রে তার লাশ ময়নাতদন্ত করা হলে মৃত্যুর সঠিক কারণ পাওয়া যাবে। তিনি মামলাটি নতুনভাবে পুনঃ তদন্তের পাশাপাশি ময়নাতদন্তের আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে সাব ইন্সপেক্টর (সিআইডি) জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এটি কোন হত্যাকাণ্ড হয়, প্রকাশ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় রাকিবুল ইসলামের মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি জানান।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর