চিকিৎসা না পেয়ে দু’জনের মৃত্যু: ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী

প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৫:০৩ পিএম

নীলফামারীর ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা না পেয়ে গত দু’সপ্তাহের ব্যবধানে দু’জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটার অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। এ নিয়ে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। 

গত শনিবার বিকেলের দিকে ডোমার উপজেলার পুর্ব বোড়াগাড়ী হলদিয়াবন এলাকার মোজাফ্ফর আলীর ৯ম শ্রেনীতে পড়ুয়া মেয়ে লিমু আক্তার নিজ ঘরে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষয়টি টের পেয়ে পরিবারের লোকজন তড়িঘড়ি করে সন্ধ্যার দিকে লিমুকে মুমুর্ষ অবস্থায় ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। তাকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে লিমুকে রেখে পরিবারের লোকজন চিকিৎসককে খোজাখুজি করেও কোন চিকিৎসককে পাননি। 

তবে হাসপাতালের ডিউটি রোষ্টার অনুযায়ী সে সময় শামীমা নামের একজন প্যারামেডিক দায়িত্ব ছিলেন। অন্ত:ত ঘন্টাখানেক পরে ওই চিকিৎসক এসে রোগীকে দেখা শুরু করলে পরক্ষনেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী হাসপাতাল চত্বরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বিনা চিকিৎসায় লিমুর মৃত্যুর বিচার দাবী করে। 

খবর পেয়ে পুলিশ এসে হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নীলফামারী মর্গে পাঠায়। অবস্থা বেগতিক দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসক শামীমাকে নির্যাতন ও হাসপাতালে ভাংচুরের অভিযোগে এনে এলাকাবাসীর নামে ডোমার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অপরদিকে গত রোববার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে সকাল হতে দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখে। এতে হাসপাতালের জরুরী বিভাগ চালু থাকলেও আউটডোরে অনেক রোগী টিকিট কেটেও চিকিৎসা না পেয়ে ফেরত গেছে।

গত ছয় সেপ্টেম্বর জলঢাকার বাঁশদহ গ্রামের সলিম উদ্দিনের ছেলে মহুবর রহমান(৫০) হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসক না থাকায় বিনা চিকিৎসায় মারা যায়। নিহত মহুবর রহমানের ভাস্তে আনোয়ারুল হক অভিযোগ করে বলেন, গত পাচ সেপ্টেম্বর রাতে বুকে ব্যাথা নিয়ে আমার চাচা মহুবর রহমানকে ডোমার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরদিন ছয় সেপ্টেম্বর সকাল ১১টা পর্যন্ত হাসপাতালে কোন চিকিৎসককে খুজেও পাওয়া যায়নি। অবশেষে চাচা মহুবার রহমানী ছটফট করতে করতে বিনা চিকিৎসায় মারা যান। ডোমার হাসপাতাল মানুষকে বাঁচার জন্য নয়, মানুষকে মারার এক ফাঁদে পরিনত হয়েছে। যা দেখার কেউ নেই।

এ ব্যাপারে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা কারিমুল হাসান নাবিল তাদের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে নীলফামারী সিভিল সার্জন ডাঃ রঞ্জিত কুমার বর্মন ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ধারাবাহিক এসব দাত্বিহীনতা, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার  ঘটনাগুলো স্বীকার করে বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন প্রসিডিউর না মেনেই চলছে। বিষয়গুলি ধীরে ধীরে নির্ণয় করা হচ্ছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি দাবী করেন।

বিডি২৪লাইভ/এএস

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: