উঁইপোকা: মাটির অভিভাবক

প্রকাশিত: ০৪ মার্চ ২০১৫, ০৯:২৮ পিএম

আফ্রিকান নিষ্পাদপ প্রান্তরের বালি থেকে উঠে আসে এই দৈত্যকার উই ঢিবি (termite mounds) । এটি একটি "দিগন্ত শিল্প " । এটি দেখতে অনেটা হাতির শুরের মত । উই পোকার সাদা রঙের দেহ এবং পিঁপড়াদের মতো সামাজিকভাবে কলোনিবদ্ধ জীবন কাটায় বলে অনেক সময় উইদের সাদা পিঁপড়া বলা হলেও তা সঠিক নয়। এরা পিঁপড়াও নয়, পিঁপড়াদের সঙ্গে নিকট সম্পর্কও নেই। উইপোকা পৃথিবীতে এসেছে পিঁপড়ার চেয়ে অনেক আগে, আজ থেকে প্রায় ২০ কোটি বছর আগে। এদের জীবাশ্ম সংগৃহীত হয়েছে প্রায় ১২ কোটি বছর পূর্বের ক্রিটাসিয়াস যুগের শিলা থেকে। দেহের গঠনেও পিঁপড়া আর উইপোকার মধ্যে পার্থক্য আছে। পিঁপড়াদের পেটের গোড়ার দিকে থাকে কোমরের মতো একটি অংশ যা উইপোকাতে নেই। উইপোকার শরীর নরম, মাথা ছাড়া দেহের বাকি অংশের রং হালকা হলুদ, আর পিঁপড়ার শরীর শক্ত, রং গাঢ়।

সাম্প্রতি এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলেছেন, উই পোকা অত্যন্ত মজাদার একটি খাবার, ইহা দেহের অভ্যন্তরিন গঠন এবং সুস্থ ও বলিস্ট শরীরের জন্য খুবি উপকারী । তবে বর্তমান সময়ে আবহাওয়া ও জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে বেশ কিছু প্রজাতির উইপোকা এখন ধ্বংসের মুখে। বিজ্ঞানীরা উঁইপোকাকে মাটির অভিভাবক বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

নতুন এক রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে জীববিজ্ঞানের একজন সহকারী অধ্যাপক প্রিন্সটন এ. বলেছে, 'অতি মরুকরণের ফলে ঢিবির অভ্যন্তরের বস্তু সংস্থানের পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে'।

উই পোকা সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো, হালকা হলুদ বা ফ্যাকাশে রঙের নরম দেহবিশিষ্ট Isoptera বর্গের এক দল সামাজিক পতঙ্গ। উইপোকা প্রধানত গ্রীষ্মমন্ডলীয় দেশসমূহে বাস করে। অধিকাংশই ক্ষুদ্র থেকে মাঝারি আকারের, লম্বায় ৪-৫ মিমি; তবে গ্রীষ্মমন্ডলের কোনো কোনো রানী উই ৭০ মিমি পর্যন্ত লম্বা হয়। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে উইপোকাদের প্রায় ১৯০০ প্রজাতির বর্ণনা হয়েছে। সেলুলোজভুক (cellulose) এসব পতঙ্গ একটি সামাজিক কাঠামোতে দল বেঁধে বাস করে এবং নানাভাবে নিজেদের কর্মকান্ড ভাগ করে নেয়। কাজের দায়িত্ব ভাগাভাগির সঙ্গে দেহের গঠনগত উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়ে এদের মধ্যে বহুরূপিতার উদ্ভব হয়েছে। এদের এক জাতের সদস্য প্রজননক্ষম (primary reproductives), এদের রাজা এবং রানী বলা হয়। অন্যান্য ছোট আকারের উইপোকা কর্মী (worker) এবং সেনা (soldier) উই হিসেবে পরিচিত। এরা তাদের বাসার বা কলোনির পৃথক পৃথক কাজকর্ম সম্পন্ন করে।-সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস

সম্পাদনা: তাহমিনা শাম্মী।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: