লাউ চাষে লাখপতি!

প্রকাশিত: ১৯ নভেম্বর ২০২০, ০১:১৮ এএম
সবুজ ক্ষেত জুড়ে শুধু লাউ আর লাউ। মাচার উপরে গাছ আর তার নীচে ঝুলছে হাজার হাজার লাউ। দেখলে যেন চোখ জুড়িয়ে যায়। এই লাউ এর আবাদ করে লাখপতি বনে গেছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার শাহাপুর-ঘিঘাটি গ্রামের রফিকুল ইসলাম নামের একজন শিক্ষিত চাষী। যিনি বাড়ির পাশের তিন বিঘা জমিতে লাউ এর আবাদ করেছেন। তার ক্ষেতের উৎপাদিত লাউ যাচ্ছে ঢাকায়। শুধু লাউ নয় বেগুন, টমেটো,ফুল, কুল,সহ নানা রকম সবজীর আবাদ করে তিনি এলাকায় এখন মডেল কৃষককে পরিণত হয়েছে। লাউ চাষী রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি লেখাপড়া শেষ করে ঢাকায় চাকুরী করতেন। পরে চাকুরী ছেড়ে বেশ কয়েক বছর বিদেশে থাকেন। সেখানকার উপার্জিত অর্থ দিয়ে তিনি গ্রামে বেশ কিছু জমি ক্রয় করেন। এরপর বিদেশ থেকে ফিরে এসে আর কোন চাকুরী না খুঁজে কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন। সেই থেকে তার চাষাবাদ শুরু। বিগত ১৫/১৬ বছর যাবত তিনি কৃষি কাজের সাথে জড়িত রয়েছেন। রফিকুল ইসলাম তার বাড়ি পাশের তিন বিঘা জমিতে গত ভাদ্র মাসে লাউ এর আবাদ শুরু করেন। জমি তৈরি, সার, সেচ, কিটনাশক, মাচা তৈরি, পরিচর্যাসহ অন্যান্য খাতে তার বিঘা প্রতি খবর হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। তিনি আরো জানান, গাছ লাগানোর ১২০ দিনের মাথায় লাউ পাওয়া যায়। তিনি লাল তীর কোম্পানীর ডায়না জাতের লাউ এর আবাদ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে থেকে তিনি ২ লক্ষাধিক টাকার লাউ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন। সে হিসেবে চাষী রফিকুল ইসলাম তিন বিঘা জমি থেকে প্রায় ৮ লাখ টাকার লাউ বিক্রি করতে পারবেন। উৎপাদন ব্যয় বাদে তার সাড়ে ৬ লাখ টাকা লাভ হবে বলে। রফিকুল ইসলামের কৃষি কাজে তার শিক্ষিকা স্ত্রী উৎসাহিত করে থাকেন বলেও তিনি জানান। রফিকুল ইসলাম আরো জানান, স্থানীয় বাজারে লাউ এর দম কম। কিন্তু ঢাকার বাজারে লাউ এর দাম বেশি। স্থানীয় বাজারে একটি লাউ ২০ থেকে ৩০ টাকা ও ঢাকার বাজারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা একটি লাউ বিক্রি হয়ে থাকে। এজন্য তিনি ঢাকার কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী, বাইপেইলসহ অন্যান্য স্থানে লাউ বিক্রি করেন। তার বাড়ি সামনে ট্রাক এসে লাউ গুলি নিয়ে যায়। প্রতিদিন তিনি তার ক্ষেত থেকে লাউ তুলছেন। আগামী আরো ৩/৪ মাস যাবৎ তিনি লাউ বিক্রি করতে পারবেন। শিক্ষিত চাষী রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি চাকুরী, ব্যবসা সবকিছুই করেছেন। কিন্তু কৃষি কাজে তিনি গর্ববোধ করেন। যার কারনে তিনি ১৫ বছর আগ থেকে কৃষি কাজ শুরু করেন। তিনি আরো বলেন, কৃষি কাজে আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি এবং আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি। ত্রিলোচনপুর ইউপি’র উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম জানান, রফিকুল ইসলাম একজন বড় চাষী। তিনি লাউ ছাড়াও বেগুন, টমেটোসহ অন্যান্য সবজীর আবাদ করেন। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে তাকে জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ, উন্নতি প্রযুক্তি ব্যবহারসহ যাবতীয় কৃষি পরামর্শ দিয়ে আসছি। বর্তমানে তিনি তার ক্ষেতের লাউ ঢাকায় পাঠাচ্ছেন। কৃষি বিভাগ থেকে তাকে সার, বীজ ও প্রদর্শনী প্লট দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: