প্রাকৃতিক রূপ লাবণ্যে ভরা এবং নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা। এ জেলায় রয়েছে অসংখ্য পর্যটনকেন্দ্র। করোনার বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় দীর্ঘ প্রায় ৫ মাস পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তবে সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) থেকে রাঙ্গামাটির সকল পর্যটনকেন্দ্র গুলো খুলে দেয়া হয়েছে। খুলছে হোটেল- মোটেলও। পর্যটকদের স্বাগত জানাতে হোটেল-মোটেলগুলোকে সাজানো হয়েছে নবরূপে। তাই নতুন স্বাভাবিকতায় ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নে রাঙ্গামাটির পর্যটন শিল্প। নতুন কোনো সংকট তৈরি না হলে করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শর্তমতে পর্যটনকেন্দ্র, হোটেল-মোটেল ও বিনোদন কেন্দ্র আসন সংখ্যার ৫০ শতাংশ ব্যবহার করে চালু করতে পারবে। এ নিয়ে ১২ আগস্ট প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে বা অবহেলা করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত ব্রীজ ও পলওয়েল পার্কে প্রথম দিনে পর্যটকের উপস্থিতি খুবই কম। তবে সামনের দিনগুলো পর্যটক বাড়বে বলে আশা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
নোয়াখালী থেকে আসা পর্যটক হৃদয় ও বখতিয়ার জানান, দীর্ঘদিন করোনার কারণে তাদের জীবনে খুবই বিরক্তি বোধ হচ্ছে। তাই তারা প্রকৃতিকে উপভোগ করতে রাঙ্গামাটিতে ঘুরতে এসেছেন। কিন্তু তাদের মন একটু চাঙ্গা হলেও পর্যটকের সংখ্যা কম হওয়ায় তাদের তেমন ভালো লাগেনি।
চট্টগ্রামের বাকলিয়া থেকে আসা পর্যটক মো. পারভেজ হোসেন জানান, পর্যটনকেন্দ্র পর্যটক কম থাকলে আনন্দ কম হয়। তবে প্রাকৃতিক ও পাহাড়ের
সৌন্দর্য্যে দেখে মনে অনেক প্রশান্তি লাগলো। রাঙ্গামাটি পর্যটন নৌযান ঘাটের ইজারাদার রহমত আলী জানান, দীর্ঘদিন পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় অনেক শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
কিন্তু বৃহস্পতিবার সরকারি নির্দেশে পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ায় অনেক শ্রমিক কাজে ফিরেছেন। তিনি আরো জানান, প্রথমদিনে পর্যটকের উপস্থিতি কম
হলেও সামনে পর্যটক বাড়বে। এবার কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি। রাঙ্গামাটি আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন সেলিম জানান, ইতিমধ্যে অনেক আবাসিক হোটেল বন্ধ হয়ে গেছে। তাদেরকে যদি সরকারি ভাবে কোনো সাহায্যে সহযোগিতা করা যায় তাহলে তারা আবার হোটেল চালু করতে পারবেন। তিনি আরো জানান, প্রথমদিনে পর্যটক খুবই কম সামনে পর্যটক
বাড়লে লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে তিনি আশা করেন।
রাঙ্গামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া জানান, করোনার কারণে পর্যটন শিল্পে যা ক্ষতি হয়েছে,তা পুষিয়ে নেয়া কখনো সম্ভব
না। কারণ, এটি পর্যটকদের মৌসুম নয়। তবে আশা করা যায়, নতুন কোনা সংকট তৈরি না হলে পর্যটক মৌসুমে পর্যটক আসলে ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে নেওয়া যাবে বলে তিনি জানান।
পাঠকের মন্তব্য: